শিরোনাম:

খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ পঞ্চগড় কর্তৃক আয়োজিত খতমে নবুওয়ত আক্বিদা শীর্ষক সেমিনার

সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ আয়োজিত সেমিনারের ইশতেহার

ইনস্যুরেন্স নিউজ বাংলা ডেস্ক জানুয়ারী ২৯, ২০২৪


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

নাহমাদুহু ওয়া নুসাল্লি আ'লা রাসূলিহিল কারিম,  আম্মাবা'দ-

খতমে নবুওয়ত আকীদা ইসলামের অপরিহার্য একটি ধর্ম বিশ্বাস । খতমে নবুওয়ত আকীদার অর্থ হল- আল্লাহ তায়ালা মানুষের হেদায়েতের জন্য যুগে যুগে অগণিত নবীরাসূল প্রেরণ করেছেন। সেই ধারাবাহিকতায় সবশেষে হযরত মুহাম্মাদ সা. কে শেষনবী ও রাসূল বানিয়ে পাঠিয়েছেন এবং তার মাধ্যমে মানুষের জন্য ইসলামকে পরিপূর্ণ করে দিয়েছেন। নবীমুহাম্মাদ সা. এর পরে আর কোন নবী বা রাসূলের প্রয়োজন নেই। সুতারাং হযরত মুহাম্মাদ সা. সর্বদিক থেকে সর্বশেষ নবী ও রাসূল। তার পরে নতুন কেউ নবী হয়ে আসবেনা। এই ধর্ম বিশ্বাস অটুট থাকলে ইসলাম কিয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী হয়। অন্যথায় ইসলাম চিরস্থায়ী ধর্ম হিসেবে বাকি থাকেনা।

অতএব হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর পরে কেউ নবী হওয়ার দাবি করলে সে মিথ্যুক, ভন্ড ও প্রতারক। আর যে কেউ অন্য কাউকে নবী বিশ্বাস করবে সে বেঈমান ও কাফের। এটি ইসলামের শুরু থেকে অদ্যাবধি সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত। কোরআন-হাদিস ও ইজমা-কিয়াস ইসলামের এই চার দলিলের ভিত্তিতে এই মতবাদ সুপ্রতিষ্ঠিত। দুনিয়াতে যতদিন ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠিত ছিল ততদিন এই মতবাদের ভিত্তিতে মিথ্যা নবুওয়তের দাবিদার ও তার অনুসারীদেরকে কোরআন সুন্নাহর  আইন মোতাবেক উৎখাত করা হয়েছে।

অতঃপর বৃটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের কাদিয়ান গ্রামে জন্মগ্রহণকারী মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (মৃত্যু- ১৯০৮ ঈ.) সামাজ্রবাদী বৃটিশের ছত্রছায়ায় কোরআন হাদিসের অপব্যাখ্যা করে নিজে নবী হওয়ার দাবি করে। সে লাগাতার ইমাম মাহদী, প্রতিশ্রুত মাসীহ, জিল্লি বুরুজি নবী এবং স্বতন্ত্র নবী; বরং স্বয়ং মুহাম্মাদ হওয়ার দাবি করে ইসলামের মধ্যে চরম বিকৃতি সাধনের ষড়যন্ত্র করে এবং বৃটিশের সহযোগিতায় স্বতন্ত্র একটি জামাত প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়। তথাকথিত আহমদিয়া মুসলিম জামাত নামক কাদিয়ানী সম্প্রদায়- ওআইসি, রাবেতাআলমে ইসলামিসহ বিশে^র সকল মুসলমানদের দৃষ্টিতে অমুসলিম বা কাফের হওয়া সত্ত্বেও নিজেদেরকে তারা মুসলমান দাবি করে যাচ্ছে। ফলে একদিকে সাধারণ মুসলমান যেমন ধোকায় পড়ে ঈমান হারাচ্ছে তেমনি ইসলাম ধর্মের সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়ছে।

বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক দেশ। সংবিধানের আলোকে এদেশের প্রতিটি নাগরিক স্বাধীনভাবে আপন ধর্ম পালন করতে পারবে। সংবিধান অন্য কারো ধর্মকে বিকৃত করার বা কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার অনুমতি দেয় না। অথচ কাদিয়ানীরা এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হেনে চলছে। এহেন পরিস্থিতিতে কাদিয়ানীদের ধর্মীয় অধিকার প্রদান এবং মুসলমানদের ইসলামের সুরক্ষার স্বার্থে কাদিয়ানীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র ধর্ম অনুমোদন করা প্রয়োজন। তাহলে কাদিয়ানীরা স্বতন্ত্র ধর্মের অনুসারী হয়ে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে নাগরিক অধিকার পাবে এবং মুসলমানরাও ইসলামের সুরক্ষা পাবে।

পক্ষান্তরে রাষ্টীয়ভাবে কাদিয়ানীদেরকে সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণা না করার কারণে প্রতিনিয়ত যে সমস্যাগুলো দেখা যাচ্ছে, তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সমস্যা :-

১। কাদিয়ানীরা স্বাধীন ও স্বতন্ত্র ধর্ম চর্চার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

২। কাদিয়ানীরা ইসলামের নাম ব্যবহার করে ইসলামকে বিকৃত করার সুযোগ পাচ্ছে।

৩। ইসলামের সুরক্ষা হুমকির মুখে পড়ছে।

৪। মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হচ্ছে।

৫। কাদিয়ানীরা তাদের উপাসনালয়কে মসজিদ বলার কারণে সাধারণ মুসলমান ধোকা ও প্রতারণার শিকার হচ্ছে।

৬। কাদিয়ানীদের সঙ্গে মুসলমানদের বৈবাহিক সম্পর্ক হারাম হওয়া স্বত্ত্বেও মুসলমানরা তার শিকার হচ্ছে।

৭। ইসলামের পূণ্যভূমি মক্কা মদিনায় কাদিয়ানীদের প্রবেশের অনুমতি না থাকলেও কাদিয়ানীরা সে সুযোগ পাচ্ছে।

৮। কাদিয়ানীরা ইসলামের নামে বিবিধ ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠান করার সুযোগ গ্রহণ করছে। ফলে সমাজের শান্তি শৃংঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে।

এমতাবস্থায় অদ্যকার সেমিনার সর্বসাধারণের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে যে,

১। অনতিবিলম্বে সরকারীভাবে কাদিয়ানীদের সংখ্যালঘু অমুসলিম ঘোষণা করা হোক।

২। পঞ্চগড়ের আহমদনগরে কাদিয়ানীদের আহুত আগামী ২৩, ২৪, ২৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪ এর তথাকথিত সালানা জলসা বন্ধ করা হোক।

তা না হলে বরাবরের মতো সাধারণ জনগণের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হতে পারে এবং শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট হতে পারে। প্রশাসনের অবহেলা ও খামখেয়ালির কারণে এমন কিছু ঘটলে তার দায়ভার প্রশাসন ও কাদিয়ানীদেরকেই বহন করতে হবে।

সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত সংরক্ষণ পরিষদ আপামর সাধারণ জনতাকে সঙ্গে নিয়ে দাবি আদায়ের জন্য- শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করে যাবে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি